মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি সহজ উপায়
প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার
১০টি সহজ উপায়? স্থায়ী মোটা হওয়ার উপায়? কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজির
পরও আপনার উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না। চিন্তার কোন কারণ নেই আজকে আমি আপনাদের
সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই আর্টিকেলটি লিখেছি। জানতে হলে আমাদের সঙ্গেই
থাকুন।
এই আধুনিক যুগে যখন সবাই ওজন কমাতে ব্যস্ত তখন অনেকেই ওজন বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে থাকে। যাদের ওজন কম ঝড় আসলে উড়ে যাবি, হ্যাঙ্গার এর সাথে শার্ট ঝুলে আছে এরকম কটু কথা অনেক শুনতে হয়। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনাদের আর কেউ এরকম কটু কথা বলতে পারবে না। তাই মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি উপায় সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি সহজ উপায়
- মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি সহজ উপায়
- স্থায়ী মোটা হওয়ার উপায় জেনে নিন
- মোটা না হওয়ার কারণ কি?
- মোটা হওয়ার জন্য যে খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা
- সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
- মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা দেখে নিন
- ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়
- মোটা হওয়ার জন্য যেসব ব্যায়াম করতে হবে
- মোটা হওয়ার অপকারিতা জেনে নিন
- লেখকের মন্তব্যঃ মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১০টি সহজ উপায়
মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি সহজ উপায়
মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি সহজ উপায় সম্পর্কে জানতে হলে এই অংশটুকু মনোযোগ
সহকারে পড়ুন। আমরা অনেকেই আছি বয়সের তুলনায় আমাদের ওজন অনেক কম। ওজন
কম হওয়ার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু ওজন কমানো যেমন সহজ নয়
তেমনি ওজন বাড়ানোও সহজ নয়।
আরও পড়ুনঃ অর্জুন গাছের শিকড়ের উপকারিতা জেনে নিন
তবে আমার দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী আপনারা যদি চলতে পারেন তাহলে মাত্র ১৫ দিনে
১৫টি সহজ উপায় অবলম্বন করে মোটা হতে পারবেন। এখানে আমি আপনাদেরকে মোটা
হওয়া বলতে অধিক ওজন বৃদ্ধি করাকে বুঝাচ্ছি না। মোটা হওয়া বলতে আমি
স্বাস্থ্যবান কে বুঝাচ্ছি। চলুন মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি সহজ উপায়
সম্পর্কে জেনে নেই।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন; দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, বাটার, ছানা সয়াবিন তেল ইত্যাদি নিয়মিতভাবে খেতে হবে। কারণ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরের পেশি বৃদ্ধি পায় ওর শরীর মোটা হয়।
- ভাত, রুটি, আলু, মাখন ও দুগ্ধ জাতীয় খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যা শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন প্রয়োজনের তুলনায় 1000 ক্যালোরি খাবার বেশি খেতে হবে।
- ছোট ছোট মিল নিতে হবে। অর্থাৎ দিনে তিনবারের পরিবর্তে ৫ থেকে ৬ বার খাবার গ্রহণ করুন। এতে করে খাবার দ্রুত হজম হবে এবং ক্যালোরি বেশি খাওয়া হবে।
- মধু, দুধ, কলা, খেজুর, মিশ্রিত বাদাম ও চিনি মিশ্রিত মিল্কশেক খেতে হবে। এই মিল্কশেক এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। এই মিল্কশেকটি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
- আবার দুধ ও আম মিশ্রিত করে একটি মিল্কশেক তৈরি করুন। এই মিল্কশেক খেলে ওজন বৃদ্ধি হয়।
- প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কাঁচা কলা ও সঙ্গে দুধ খেলে অনেক বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়। যা শরীরের ওজন ও শক্তি দুটোই বৃদ্ধি পায়।
- রাতের বেলা কিসমিস ও বাদাম একসঙ্গে ভিজিয়ে রেখে তা সকালে ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিলে অনেক ক্যালরি পাওয়া যায়। যা আমাদের শরীরকে শক্তিশালী ওজন বৃদ্ধি করে।
- এছাড়াও প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের ওজন খুব দ্রুত বৃদ্ধি করা যায়।
- প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ঘুমালে শরীর ক্যালোরি সংরক্ষণ করতে পারে। যার ফলে অতি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়।
- নানারকম মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত টেনশন এর কারণে ওজন বৃদ্ধি ব্যাহত ঘটে।
- ওজন বৃদ্ধি করার জন্য বাজারে অনেক রকমের সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়। তবে সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- স্বাস্থ্যকর ফলমূল যেমন; কলা, আপেল, লিচু, অ্যাভোকাডো, চেরি ফল, আঙ্গুর, কিসমিস ও বিভিন্ন রকমের বাদাম ইত্যাদি ফলমূল জাতীয় খাবার খেলে অতি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়।
- অধিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে খাবার গ্রহণের সময় যেন পানি পান না করা হয়। এতে খাবারের চাহিদা কমে যায়। বেশি বেশি পানি পান করলে দ্রুত হজম হয় এবং খাবারে চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
-
খাবারের তালিকায় বেশি বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে। কারণ
প্রোটিন শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে।
-
ঘি ও চিনি মিশ্রিত করে খেতে হবে। একদিকে ঘি চর্বি জাতীয় খাবার অন্যদিকে
চিনি শর্করা জাতীয় খাবার। এই দুই প্রোটিন জাতীয় খাবারে রয়েছে ওজন
বৃদ্ধি করার ক্ষমতা।
উপরের উপায় গুলো ছাড়াও আরো অনেক উপায়ে দ্রুত মোটা হওয়া যায়। তবে ওজন
বৃদ্ধি করার নেশায় অতিরিক্ত ওজন বাড়ানো যাবে না। আপনার বিএমআই অনুযায়ী
ওজন ঠিক রাখুন। তাহলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে। আশা করি
আপনারা, মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১৫টি সহজ উপায় সম্পর্কে কিছুটা হলেও
ধারণা পেয়েছেন।
স্থায়ী মোটা হওয়ার উপায় জেনে নিন
স্থায়ী মোটা হওয়ার উপায় জেনে নিন? এমন প্রশ্ন আপনারা অনেকেই করে
থাকেন। আমরা অনেকেই আছি যাদের ওজন বয়স উচ্চতার তুলনায় অনেক কম। ওজন
কম থাকার কারণে শরীর দুর্বল থাকে।অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও এক বার
অসুস্থ হলে সুস্থ হতে অনেক সময় লাগে। তাই কেউ যদি স্থায়ীভাবে ওজন
বাড়াতে চায় তাহলে তাকে নিচের দেওয়া নির্দেশনা গুলো মেনে চলতে হবে।
- ওজন বাড়ানোর জন্য কিছু স্বাস্থ্যকর ব্যায়াম আছে। যেগুলো প্রতিদিন নিয়মিতভাবে পরিচর্যা করতে হবে।
-
দিনে কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। মানসিক দুশ্চিন্তা করা
থেকে বিরত থাকতে হবে।
-
প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ লিটার পানি পান করতে হবে। অবশ্যই খাওয়ার মধ্যে
পানি পান করা যাবে না। খাওয়ার ৩০ মিনিট পর পানি পান করতে
হবে।
- এবং দিনে ৫ থেকে ৭ বার খাবার খেতে হবে।
-
যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি রয়েছে এমন খাবার গ্রহণ করতে
হবে।
- আপনার খাবার তালিকায় উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে।
উপরোক্ত নিয়ম কারণগুলো ছাড়াও আরো অনেক কিছু উপায় আছে, যেগুলো মেনে
চললে স্থায়ী ভাবে মোটা হওয়া যায়। আশা করছি, স্থায়ী মোটা
হওয়ার উপায় সম্পর্কে আপনাদের কিছুটা হলেও ধারণা দিতে
পেরেছি। আপনারা চাইলে উপরের দেয়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে স্থায়ীভাবে মোটা হতে
পারেন।
মোটা না হওয়ার কারণ কি?
মোটা না হওয়ার কারণ কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে এ অংশটুকু মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।আমরা অনেকেই আছি যারা নিয়মিতভাবে খাবার গ্রহণ করি। এছাড়াও
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর পরও ওজন বৃদ্ধি হয় না। চলুন জেনে নেয়া যাক
কেন বেশি বেশি খাওয়ার পরও ওজন বাড়ছে না।
আপনার পরিবারের সবাই যদি রোগা হয়ে থাকে তাহলে আপনার ওজন বৃদ্ধি অনেকটাই
অসম্ভব।জেনেটিক কারণের জন্য ওজন বৃদ্ধি পায় না। আবার অনেকেই নানা রকম
দুশ্চিন্তায় ভোগে। এ কারণে তাদের শরীরে চর্বি জমে না। অনেক মানুষেরই
হাই মেটাবলিজম থাকার কারণে শরীরে চর্বি জমা হয় না।যার ফলে ওজন ও বৃদ্ধি পায়
না।
অনিয়মিতভাবে খাবার খেলে শরীরে পুষ্টি উপাদান ঠিকমতো পায় না। যার ফলে
শরীর রোগা হয়ে যায়।আবার অনেকের ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যার কারণে শরীরে
ওজন বৃদ্ধি পায় না। এছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী বিভিন্ন রোগের জন্য শরীরে
প্রয়োজনীয় শক্তি থাকে না যার ফলে শরীরের ওজন কমে যায় আশা করি আপনারা বুঝতে
পেরেছেন মোটা না হওয়ার কারণ কি।
মোটা হওয়ার জন্য যে খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা
মোটা হওয়ার জন্য যে খাবারগুলো খাওয়া যাবে না এই সম্পর্কে জানতে হলে নিচের
অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আমরা অনেকেই রোগা হওয়াকে অনেক বড় রোগ হিসেবে
ধরে নেই। সেজন্য যাদের ওজন কম তারা ওজন বৃদ্ধি করার জন্য উঠে পড়ে লেগে
যায়। সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী করতে হয়।
অনেকেই ওজন বৃদ্ধি করার তাগিদে নানারকম জাঙ্ক ফুড খেয়ে থাকি। এছাড়াও
উচ্চমাত্রায় প্রোটিন আছে এরকম খাবার গ্রহণে আগ্রহী হই। কিন্তু মোটা
হওয়ার জন্য সব খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য উচিত নয়। চলুন জেনে নেওয়া
যাক, মোটা হওয়ার জন্য যে খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা এই সম্পর্কে।
বিভিন্ন রকমের জাঙ্ক ফুড
যেমন; চিপস, চানাচুর, বার্গার, পিজ্জা, কোমল পানীয়
এছাড়াও আরো নানান রকম খাবার। এই খাবারগুলো শরীরের পুষ্টি উপাদান শুষে
নেয় এবং বিভিন্ন রকম রোগ বালাই সৃষ্টি করে। তাই আমাদেরকে এ জাতীয় খাবার
খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।
এছাড়াও অনেক খাবার আছে যেগুলোতে অতিরিক্ত পরিমাণে মসলা থাকে। এ ধরনের খাবার
কখনোই খাওয়া যাবে না। সব রকমের কেক খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ
এই খাবার হজমের ব্যাপক সমস্যা করে। যত রকমের মিষ্টি জাতীয় খাবার আছে
সবগুলোই ত্যাগ করতে হবে। কারণ এই মিষ্টি জাতীয় খাবার আপনার ওজন তো বৃদ্ধি
করবে কিন্তু,
শরীরকে নানা রকম হুমকির দিকে ফেলবে। যেমন; ডায়রিয়া, ডায়াবেটিস ও
হরমোনের সমস্যা ইত্যাদি। এছাড়াও ক্যাফিন যুক্ত খাবার চা ও কফি খাওয়া বন্ধ
করতে হবে। কারন এই খাবারগুলো খাবারে অরুচি সৃষ্টি করে এবং হজমে সমস্যা
করে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মোটা হওয়ার জন্য কোন খাবারগুলো খাওয়া
কখন উচিত নয়।
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়? আপনাদের অনেকেরই এরকম প্রশ্ন
থাকে। অর্থাৎ দিনের শুরুতেই যদি পুষ্টিকর খাবার দিয়ে খাওয়া আরম্ভ করা যায়
তাহলে ওজন বৃদ্ধি করা সম্ভব। ওজন বৃদ্ধি করে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া
হয় সকালের খাবার কি। আপনি সকালে পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীরে এনার্জি
বুস্ট করে। চলুন জেনে নেয়া যাক।
সকালে খালি পেটে দুধ ও ডিম খেলে শরীরের ওজন বাড়ানো যায়। আবার চাইলে
ভেজানো ছোলা খেতে পারেন। কিন্তু থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও মিনারেল
দেহকে সুস্থ রাখে ও পেশীকে মজবুত করে।সকালে খাবার মেনুতে সিদ্ধ আলু অথবা ভাজা আলু
খেতে পারেন। কারণ আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা।
যা ওজন বৃদ্ধিতে অনেক বেশি সহায়তা করে। সকালে মিল্কসেক খেতে হবে
দুধ, খেজুর, কলা, কিসমিস, চিনি ও বিভিন্ন রকমের বাদাম মিশ্রণ
করে এই মিল্কসেকটি প্রস্তুত করতে হবে। আবার চাইলে ভেজানো কিসমিস খেতে
পারেন। এর মধ্যেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন।
এছাড়াও সকালে আরো নানারকম পুষ্টিকর খাবার যেমন বাটার, মাখন, ঘি ও
দুগ্ধ জাতীয় খাবার খেতে হবে। কারণ ওজন বাড়ানোর জন্য আমাদের শরীরের দরকার
অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালরি। যাও এই খাবারগুলোতে অনেক বেশি পরিমাণে
থাকে। আশা করি আপনারা কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন যে, সকালে খালি পেটে
কি খেলে মোটা হওয়া যায় এই সম্পর্কে।
মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা দেখে নিন
মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা দেখে নিন? এরকম প্রশ্নের উত্তরে আজকে আমি এই
অংশটুকুতে আলোচনা করব। শুধু বেশি বেশি খেলেই মোটা হওয়া যায় না। মোটা
হওয়ার জন্য খাবার খাওয়ার অনেক নিয়ম কানুন আছে। সবকিছু মেনে খাবার খেলেই
মোটা হওয়া যায়। চলুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
সকালের খাবারঃ সকালে যে খাবার খাবেন সেই খাবার আপনাকে সারা
দিনের পুষ্টি যোগান দিবে। তাই সকালে এক গ্লাস গরম দুধ ও ১-২ দুইটি
সিদ্ধ অথবা অমলেট ডিম খেতে হবে। আবার সকালে ২-৩ কি খেজুর খেতে পারেন। এই খাবারগুলো
খেলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং প্রচুর ক্যালরি থাকায় ওজন বৃদ্ধি
পাবে।
দুপুরের লাঞ্চঃ দুপুরের খাবারে ঘন ডাল, মুরগির মাংস অথবা
মাছ, শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে ভাত খেতে হবে। এই খাবারগুলো হল আমি
জাতীয় খাবার যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। এছাড়াও এই খাবারগুলোর
সাথে আরো খেতে পারেন টক দই। টক দই হজম ক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং ওজন বৃদ্ধিতে
সাহায্য করে।
বিকেলের খাবারঃ বিকেলের খাবারে আপনারা এক গ্লাস দুধ অথবা
মিল্কশেক খেতে পারেন। এছাড়াও সাথে যুক্ত করবেন ৫-৭ টি বাদাম ও
দুইটি কলা অথবা আম। এই খাবার গুলো উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ তাই দ্রুত ওজন
বাড়াতে সাহায্য করবে।
রাতের খাবারঃ রাতে আবারো ঘন ডাল খেতে হবে। আরো থাকবে মুরগির
মাংস অথবা উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছ। এক্ষেত্রে মাংস দুই পিস অথবা মাছ এক পিস
খেতে হবে। এর পাশাপাশি শাকসবজি খেতে হবে। তাহলেই শরীরের
ক্যালরি ঘাটতি দূর করে ওজন বৃদ্ধি করবে।
ঘুমানোর আগের খাবারঃ ঘুমানোর আগে অবশ্যই এমন কিছু পুষ্টিকর
খাবার খেতে হবে যা শরীরের সারারাত পুষ্টি যোগাবে। অবশ্যই ঘুমানোর আগে এক
গ্লাস দুধ খেতে হবে এবং ২-৩ পিস খেজুর খেতে হবে।
খাবার তালিকায় আমি যে যে খাবার গুলো রেখেছি আপনারা চাইলে এই রুটির
অনুযায়ী খেতে পারেন। এর মধ্য থেকে আপনারা যে খাবারটা খেতে পছন্দ করেন না।
সেই জায়গাতে উন্নত অন্য খাবার রাখতে পারি। শুধু এই রুটিন মেনে খেলেই হবে
না। এর সঙ্গে দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম। আশা করি আপনাদের মোটা হওয়ার
খাদ্য তালিকা সম্পর্কে অনেকটাই বোঝাতে পেরেছি।
ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়
ইসলামে মোটা হওয়ার উপায় কি? এরকম প্রশ্ন আপনারা অনেকেই করেন। আসলেই
ইসলামে মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। যেহেতু রোগা হওয়া এক
ধরনের রোগ তাই আমাদের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক
ইসলামে মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে।
- রাসুল (সাঃ) খেজুর ও দুধ একসঙ্গে খেতে বলেছেন। তিনি নিজেও এই খাবার থেকে যথেষ্ট উপকারিতা পেয়েছেন।
- মধু ও কালোজিরা মিশ্রিত করে খেতে পারেন। পবিত্র হাদীসে বর্ণিত আছে " মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের মহা ঔষধ হলো কালোজিরা" (সহিহ বুখারী)।
- শসা ও খেজুর একসঙ্গে খেয়ে ওজন বৃদ্ধি করা যায়। যা হযরত আয়েশা রাঃ হতে বর্ণিত। (সুনানে আবু দাউদ)
-
আয়তাল কুরসি ও সূরা ওয়াকিয়া প্রতিদিন পড়লে রিজিক বৃদ্ধি পায়। যার
ফলে এক প্রকার শরীর সুস্থ থাকে এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।
-
দৈনিক " ইয়া লাতিফু" ১২৯ বার পাঠ করলে শরীরের বালা মুসিবত সবকিছু দূর
হয়ে যায়। এবং শরীরে ওজন বৃদ্ধিতে কাজ করে।
উপরোক্ত আমলগুলো প্রতিনিয়ত করতে পারলে মহান আল্লাহতালা কর্তৃক
বরকত পাওয়া যায়। তাই যারা ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী ওজন বৃদ্ধি করতে
চান তারা উপরের নিয়ম গুলো মেনে চলতে পারেন। কয়েকদিনের মধ্যে আপনি নিজেই ফলাফল
অনুভব করতে পারবেন। সুপ্রিয় পাঠক মন্ডলী আশা করি আপনারা কিছুটা হলেও
ধারণা পেয়েছেন, ইসলামের মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে।
মোটা হওয়ার জন্য যেসব ব্যায়াম করতে হবে
মোটা হওয়ার জন্য যেসব ব্যায়াম করতে হবে, জানতে হলে এই অংশটুকু মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।মোটা হওয়ার জন্য ব্যায়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওজন
বৃদ্ধিতে শুধু প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়াই যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি
নিয়মিতভাবে কয়েকটি ব্যায়াম করতে হবে। চলুন এখন জেনে নেই মোটা হওয়ার
জন্য কোন কোন ব্যায়াম করতে হয়।
- পুস আপ
- ওয়েট ট্রেনিং
- মেডিটেশন
সুপ্রিয় পাঠক মন্ডলী, ওজন বৃদ্ধির জন্য আমার কাছে মনে হয় এই
তিনটি ব্যায়ামই যথেষ্ট। এই ব্যায়ামগুলো প্রতিদিন বিকেলের
শেষদিকে করতে হবে। এর জন্য আপনাদেরকে কোন জিমে যাওয়ার দরকার
পড়বে না। বাড়িতে থাকা জিনিস দিয়েই আপনারা চাইলে ব্যায়ামগুলো করতে
পারেন। এই ব্যায়ামগুলো শুধু শরীর নয় মন কেউ চাঙ্গা রাখে।
মোটা হওয়ার অপকারিতা জেনে নিন
মোটা হওয়ার উপকারিতা জেনে নিন? আপনারা অনেকেই জানতে চান মোটা
হওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। একদিকে রোগা হওয়া যেমন অনেক বেশি কষ্টের
তেমনি মোটা হলেও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এখন এই অংশটুকুতে আমি
আপনাদেরকে জানাবো মোটা হওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। জানতে হলে আমাদের সাথেই
থাকুন।
মোটা হওয়ার আগে অবশ্যই দেখে নিন আপনার ওজন স্বাভাবিকের থেকে কম
আছে কিনা। এছাড়াও অনেক রকম রোগের কারণে দেহের ওজন কমতে
পারে। তাই ওজন বাড়ানোর পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে যাচাই করতে
হবে আপনার কোন রোগ নেই। এবার আসা যাক যারা প্রয়োজনীয় তুলনায় বেশি
ওজনের অধিকারী।
- হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে
- স্ট্রোকের প্রবণতা বাড়ে
- হজমের সমস্যা হয়
- মহিলাদের ওভারিতে সিস্ট সমস্যা হতে পারে
- শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যথা হয়
- হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়
- শরীরের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করে
এছাড়াও আরো নানারকম সমস্যা হয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত রোগা যেমন খারাপ
তেমনি অতিরিক্ত ওজনও ভালো না। আমাদের উচিত বিএমআই অনুযায়ী শরীরের ওজনকে
ঠিক রাখা। তা না হলে নানা রকম রোগের সম্মুখীন হতে হবে। সুতরাং
উপরোক্ত আলোচনা থেকে, আপনারা বুঝতেই পারছেন মোটা হওয়ার উপকারিতা কি
কি।
লেখকের মন্তব্যঃ মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১০টি সহজ উপায়
মাত্র ১৫ দিনে মোটা হওয়ার ১০টি সহজ উপায় সম্পর্কে উপরে অনেক ভালোভাবে আমি
আলোচনা করেছি। এছাড়াও কিভাবে মোটা হওয়া যায় এবং মোটা হওয়ার নানা রকম দিক
সম্পর্কে আমি বিস্তারিতভাবে আপনাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি।
লেখকের মন্তব্য থাকবে, যদি কেউ মোটা হতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে উপরের
দেওয়া দিক নির্দেশনা গুলো মেনে চলতে হবে। এবং মোটা হওয়ার জন্য কোন প্রকার
সাপ্লিমেন্ট ও জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয়
যদি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মোটা হওয়ার খাবারগুলো খাওয়া যায়।
উপরোক্ত আলোচনায় যদি আমার কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে, তাহলে আপনারা দয়া করে
ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কি ভুল হয়েছে তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। যদি
আপনাদের কাছে আমার লেখা আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার
করুন। ধন্যবাদ সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
gotechbd এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url