সকালে খালি পেটে যে ১০টি খাবার খেলে ওজন বাড়ে
প্রিয় পাঠক, আপনাদের অনেকেরই প্রশ্ন থাকে যে সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে? ওজন বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে যেমন কষ্ট পান, তেমনি ওজন কম থাকাও অনেকে কষ্ট পায়। যারা আন্ডার ওয়েট আছেন, জামা কাপড় পরলে মনে হয় হ্যাঙ্গার এর সাথে ঝুলে আছে। এরকম কটু কথা প্রায়ই শুনতে হয়। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই। এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওজন বাড়ানো মানে বেশি খাওয়া নয়। অল্প, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়ানো যায়। সকালের খাবার সারাদিনের শক্তি যোগান দেয়। আজকে আমি আপনাদের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানাবো, সকালে খালি পেটে কোন কোন খাবার খেলে দ্রুত ওজন বাড়ানো যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে
- সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে
-
যে কারণে আপনার ওজন কম থাকে জেনে নিন
- এক মাসে ওজন বাড়ানোর উপায়
- রাতে কি খেলে ওজন বাড়ে
- কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে
- অতিরিক্ত ওজন কি খারাপ ?
- ব্যায়াম করে ওজন বাড়ানোর উপায়
- ফলমূল খেলে কি ওজন বাড়ে?
-
ওজন বৃদ্ধির জন্য যেগুলো খাওয়া উচিত নয়
- লেখকের মন্তব্য জেনে নিন
সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে
সকালে খালি পেটে স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা
করে। প্রত্যেকটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দৈনিক ২০০০ থেকে ২৫০০ ক্যালোরি
খাবারের প্রয়োজন হয়। ওজন বাড়ানো মানেই বেশি বেশি খাওয়া
নয়। পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমেই সুষম ওজন বজায় রাখা
যায়। তবে সুষম ওজন বজায় রাখার জন্য সকালের খাবারের উপর বেশি গুরুত্ব
দেয়া দরকার। এখন জেনে নিব সকালে খালি পেটে যে দশটি খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি
পায়।
- ডিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। সকালে শুরুটা যদি ডিম খাওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় তাহলে মন্দ হয় না। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন। ডিম একটি আমের জাতীয় খাবার। তাই সকালে খালি পেটে ডিম খেলে শরীরের পেশী মজবুত হয়।
- দুধ এবং মধু মিশ্রিত করে সকালে খালি পেটে খাওয়া যেতে পারে। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন এবং অন্যদিকে মধুতে রয়েছে শর্করা। এই মিশ্রণটি খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করে ও শরীরের শক্তি যোগায়।
- কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট ইত্যাদি জাতীয় ড্রাই ফুডস খাওয়া যেতে পারে। ড্রাই ফুডসে রয়েছে অনেক ক্যালসিয়াম ও ফাইবার। ওজন বাড়াতে ড্রাই ফুডস অনেক কার্যকরী।
-
সকালে খালি পেটে সিদ্ধ আলু অথবা ভাজা আলু ওজন বাড়াতে অনেক সহায়তা
করে। কারণ আলুতে থাকে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট।
-
সকালে খালি পেটে দুটি পাকা কলা খাওয়া যেতে পারে। পাকা কলাতে থাকা
কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি ওজন বাড়াতে ব্যাপক কার্যকরী।
-
সকালে খালি পেটে পাউরুটির সঙ্গে পিনাট বাটার খেতে
পারেন। পিনাট বাটারে থাকা পুষ্টি ওজন বাড়াতে সহায়তা
করে।
-
সকালে খাবারের সাথে কিসমিস মিশ্রিত করে খাওয়া যেতে পারে। কিসমিস আঙ্গুর
শুকিয়ে বানানো হয় তাই এতে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। কিসমিস টক দই অথবা
বাদামের সাথে মিশিয়ে খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়।
-
যারা সকালে ভাত খেতে পছন্দ করেন। তারা ভাতের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বীজ
মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন মিষ্টি কুমড়ার বীজ, তিশির
বীজ, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি।
-
প্রতিদিন সকালে পরোটার সঙ্গে বিভিন্ন রকমের সবজি খান। সবজিতে থাকা নানা
রকম পুষ্টি উপাদান ওজন বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
- সকালে খালি পেটে একটি মিল্কশেক খেতে পারেন। কাঠবাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোট, মধু, খেজুর, কলা ও দুধ মিশ্রিত করে ব্লেন্ড করে মিল্কশেক তৈরি করতে পারেন। এই মিশ্রণটিতে রয়েছে সকল প্রকার ভিটামিন ও মিনারেল। যা ওজন বাড়াতে অনেক সহায়তা করে।
উপরোক্ত খাবারগুলি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারলে নিশ্চিত ভালো ফলাফল
পাবেন। তবে সবকিছুই পরিমিতভাবে খাওয়া দরকার। আপনি একদিন
খেয়েই ফলাফল আশা করা ঠিক নয়। নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমেই আপনি সুষম
স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবেন। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন সকালে খালি
পেটে কোন কোন খাবার খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করা যায়।
যে কারণে আপনার ওজন কম থাকে জেনে নিন
আমরা প্রত্যেকেই চাই সুষম স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে। যারা নিয়ম মেনে খাবার
গ্রহণ করে তারা সুষম স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই
সুস্বাস্থ্যের অধিকারী নই। এর কারণ হিসেবে আমরা আমাদের খাদ্যাভাস
কে দায়ী করি। সুষম স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য শুধু খাবারই
নয়। এর পাশাপাশি আরো অনেক কিছু মেনে চলতে হয়।
ওজর কম থাকার কারণে অনেক সময় কটু কথা শুনতে হয়। লোকজন খাবার খাওয়ার
পরামর্শ দেন। কিন্তু বেশি বেশি খাবার খাওয়ার মাধ্যমে কখনোই মোটা হওয়া যায়
না। অনেকে দিনের বেশিরভাগ সময়েই খাওয়া-দাওয়া করে। তারপরও তারা
মোটা হয় না বলে অভিযোগ জানায়। আজকে আমি আপনাদের বলব যেসব কারণে ওজন কম
থাকে।
ওজন কম থাকার অন্যতম কারণ হলো জিনগত সমস্যা। অর্থাৎ আপনার পরিবারের লোকজন
যদি হালকা-পাতলা হয়ে থাকে তাহলে আপনার ওজন বাড়াতে অনেক কষ্ট হবে। আবার
যারা অতিরিক্ত পরিমাণে চিন্তাভাবনা করে তাদের ওজন বাড়ে নয়। আবার যাদের
বদহজম হয়, গ্যাসটিক, অ্যাসিডিটি ইত্যাদি সমস্যার কারণে ওজন বাড়ে না।
আবার যাদের থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাদের ওজন কম থাকে। হরমোন জনিত সমস্যার
কারণে ওজন হ্রাস পায়। স্থায়ী রোগ যেমন; ডায়াবেটিস, ক্যান্সার
ও কিডনি ইত্যাদি সমস্যা থাকলে তাদের কখনোই ওজন বাড়েনা। আবার
যারা পুষ্টিহীনতায় ভোগে তাদের ওজন কম থাকে।
খাবারের প্রতি অনীহা থাকলে ওজন কম থাকে। একজন সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তির
যেখানে প্রতিদিন 2000 থেকে 2500 ক্যালোরি খাবার খাওয়ার দরকার পড়ে। সেখানে
যাদের খাবারের প্রতি অনীহা তারা ১ হাজার ক্যালরি খাবার গ্রহণ করতে পারে
না। ইত্যাদির কারণগুলোর জন্য অনেকের ওজন কম থাকে।
এক মাসে ওজন বাড়ানোর উপায়
যাদের ওজন অনেক কম। জামা কাপড় পড়লে মনে হয় হ্যাঙ্গার এর সাথে ঝুলে
আছে। মানুষজন খাবারের পরামর্শ দেন।এরকম কটুক্তি তাদের মাঝেমধ্যেই
শুনতে হয়। নানারকম চেষ্টা করেও আপনারা দ্রুত ওজন বাড়াতে পারছেন
না। কিন্তু সামান্য খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই আপনি সুস্বাস্থ্যের
অধিকারী হতে পারবেন।
ওজন বাড়ানোর জন্য বেশি বেশি খেতে হবে। যাদের ওজন কম ও খাবারের প্রতি
অনীহা আছে। তারা দিনে চার থেকে পাঁচবার খাবার গ্রহণ করুন। তবে এর মানে
এই নয় যে জাঙ্ক ফুড খেয়ে ওজন বৃদ্ধি করবেন। পুষ্টিকর ও প্রাকৃতিক খাবার
খেয়ে ওজন বাড়াতে হবে। এতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পাবে। এখন আমরা জানবো এক মাসে ওজন কিভাবে বৃদ্ধি করবেন ?
- দিনের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় বার খাবার খেতে হবে। যেহেতু খাবারের প্রতি অনিহা আছে তাই ছোট ছোট খাবার খেতে পারেন। এতে করে হজমে সমস্যা হবে না।
-
প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমন; দুধ, ডিম, মুরগির
মাংস, মাছ, শাকসবজি, ডাল, থানা অথবা পনির ইত্যাদি জাতীয়
খাবার।
- শর্করা জাতীয় খাদ্য আপনার খাবার তালিকায় যুক্ত করুন। যেমন; ভাত, রুটি, চিনি ইত্যাদি জাতীয় খাবার। আমরা সকলেই জানি শর্করা জাতীয় খাবার শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে ম্যাজিকের মত কাজ করে।
-
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। তবে খাওয়ার আগে ও মাঝখানে পানি খাওয়া
যাবে না। এতে করে পেট ভরে যাবে এবং খাবার কম খাবেন। খাবার খাওয়ার
অন্ততপক্ষে 30 মিনিট পর পানি খাওয়া যেতে পারে।
-
নিয়মিতভাবে ঘুমাতে হবে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮ ঘন্টার কম ঘুমানো যাবে
না। ঘুম ভালো হলে খাদ্য হজম হতে সমস্যা হয় না। ফলে বেশি ক্ষুধা
লাগে।
-
সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানিতে লেবু ও নুন গুলিয়ে খেয়ে
নিন। আবার চাইলে একটুখানি আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে হজম শক্তি
বৃদ্ধি পায়।
-
নিয়মিত খাবারের ৩০ দিনের রুটিন তৈরি করুন। রুটিন করে খাবার খেলে শরীরে
সব ধরনের পুষ্টি উপাদান ঠিক থাকবে।
-
নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করুন। যেমন; পুশ আপ, দৌড়ানো ও
অন্যান্য ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের খাবার হজম হয়ে যায়। ফলে ক্ষুধা
লাগে এবং খাবারের প্রতি অনীহা থাকে না।
উপরোক্ত নিয়ম গুলো 30 দিন মেনে চললে আপনি ওজন বাড়াতে পারবেন। তাহলে বুঝতে
পেরেছেন যে ওজন বাড়ানোর জন্য শুধু বেশি বেশি খাওয়াই দরকার না। জাঙ্ক ফুড
খেয়ে যে ওজন বৃদ্ধি কতটা ভয়াবহ তা আপনারা জানেন। তাই আপনারা
সঠিক নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে আপনার ওজন বৃদ্ধি করুন।
রাতে কি খেলে ওজন বাড়ে
অনেকেই ওজন কমাতে চান আবার অনেকে ওজন বাড়াতে চান। বেশি ওজন যেমন
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমনি আন্ডার ওয়েট ও স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর। উভয়েরই সুষম স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে তাহলেই শরীরও স্বাস্থ্য
উভয় ভালো থাকবে। আজকে আমরা জানবো তাতে কি খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুনঃ পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক ও খাওয়ার নিয়ম
- রাতের খাবার শেষে পানি খেলে ওজন বাড়ে। খাবার খাওয়ার পরে শরীরের মধ্যে বিপাকক্রিয়া চলতে থাকে। এরকম সময় আপনি যদি পানি খান তাহলে বিপাক ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে খাবার হজম করতে অনেক সময় লাগে। এ কারণে খাবার খাওয়ার পর পানি খেলে ওজন বাড়ে।
- রাতে খাবার শেষ করে সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হলো হজম ক্রিয়া ধীরগতি সম্পন্ন হয়ে যায়।
- সকালে ভিজিয়ে রাখা বাদাম রাতে খেয়ে নিবেন। এতে খুব দ্রুত আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে।
-
আবার রাতের তরকারিতে বেশি বেশি আলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আলুতে থাকা
পুষ্টি উপাদান ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
-
মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন; দই, মিষ্টি, পনির সহ অন্যান্য
খাবার রাতে খাবেন। মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি
পায়।
-
আমিষ জাতীয় খাবার
যেমন; মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, সয়াবিন তেল
ইত্যাদি খাবার রাতে বেশি করে খাবেন। তাহলে দেখবেন অল্প দিনের মধ্যে
আপনার দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া আরো নানারকম পুষ্টিকর খাবার আছে যা রাতে ঘুমানোর আগে খেতে পারলে
ওজন বৃদ্ধি পায়। কাঁচা ছোলা সকালে ভিজিয়ে রেখে রাতে ঘুমানোর আগে
খেয়ে নিবেন। দেখবেন ১৫ দিনের মধ্যে আপার ওজন পাঁচ থেকে সাত কেজি বেড়ে
গেছে। এবং আপনার পেশী শক্তিশালীও মজবুত হয়েছে।
কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে
আপনি কি রোগা পাতলা? কোন প্রকার খাবার খেয়েও আপনার ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে
না? চিন্তার কোন কারণ নেই। এর আগে আমি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি
সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে। এখন আমি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা
করব কোন কোন ভিটামিন খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়।
তবে এই ভিটামিন গুলো সবার শরীরে সমানভাবে কাজ করে না। বয়স, লিঙ্গ ও পরিশ্রম
এর উপর ভিত্তি করে ভিটামিন গুলো কাজ করে থাকে। তবে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে
যারা ওজন বাড়াতে চান শুধু তারাই এই ভিটামিন গুলো খেতে পারেন। তাছাড়া যাদের
ওজন আগে থেকেই বেশি তারা ভুল করেও এই ভিটামিন গুলো খাবেন না। চলুন
ভিটামিন গুলো জেনে নেয়া যাক।
- ভিটামিন এ এমন একটি পুষ্টি উপাদান যা ওজন বাড়াতে সহায়তা করে। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার গুলো হল; ডিম, দুধ, এপ্রিকট, কলিজা, শাকসবজি, রঙিন শাকসবজি, মিষ্টি কুমড়া, মাখন ইত্যাদি। এই খাবারগুলোতে ব্যাপক হারে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
- ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার গুলো হল; দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, ছোলা, কিসমিস, রঙিন শাকসবজি ইত্যাদি। এই খাদ্য গুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি। যা দেহের ওজন বৃদ্ধিতে ব্যাপক কার্যকরী।
-
আমরা কমবেশি সবাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার চিনি। তারপরও জেনে রাখা
দরকার এই খাবারগুলো যেমন; লেবু, কমলা,
পেয়ারা, টমেটো, বাঁধাকপি, শাকসবজি ইত্যাদি। ভিটামিন সি
সমৃদ্ধ খাবার খেলে দ্রুত ওজন বাড়ানো যায়।
-
বিভিন্ন দুগ্ধ জাতীয় খাবার
যেমন; মাখন, দই, পনির, ঘি, ছানা, ভোজ্য তেল
ইত্যাদি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার। এই খাবারগুলো ওজন বৃদ্ধি করতে
সহায়তা করে।
-
এছাড়াও ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি৬
, ভিটামিন কে ছাড়াও আরো অন্যান্য ভিটামিন ওজন বাড়াতে সাহায্য
করে।
- ভিটামিন ই হল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যার শরীরের কোষ কে সুস্থ রাখে এবং দেহের ওজন ভিত্তিতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
- থাইমিন কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনকে সম্পূর্ণভাবে শক্তিতে রূপান্তর করে এবং দেহের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- ভিটামিন বি ১২ যা বিপাক ক্রিয়াকে সুস্থ রাখে। ফলে খাদ্য হজম করতে কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। আর এজন্য ভিটামিন বি ১২ ও ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- যদি আপনার খাবার তালিকা থেকে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি না পান। তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। সাপ্লিমেন্ট এর মাধ্যমে ওজন বৃদ্ধি করা অনেক সহজ।
- ডিমের কুসুম, মাশরুম, ঘি এ জাতীয় খাবারগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
যেহেতু সরাসরি কোন ভিটামিন খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বৃদ্ধি করা যায় না। ওজন বৃদ্ধি করতে হলে ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে এইসব ভিটামিনের মাধ্যমেই ওজন বৃদ্ধি করতে হবে। এবং এর পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার রুটিন।
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ, আপনারা বুঝতে পেরেছেন কোন ভিটামিন গুলো শরীরের ওজন
বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এখন শুধু নিয়ম মেনে এ ভিটামিন গুলো খেতে পারলেই
আপনার ওজন সুষম ভাবে বৃদ্ধি পাবে। ওজন বাড়ানোর নেশায় কখনোই অতিরিক্ত ওজন
বৃদ্ধি করবেন না। কারণ অতিরিক্ত ওজনের ফলে শরীরে নানা রকম রোগের সৃষ্টি
হয়।
অতিরিক্ত ওজন কি খারাপ ?
এক কথায় বলতে গেলে অতিরিক্ত ওজন স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই খারাপ। সব কিছুরই
কিছু লিমিট থাকা দরকার। অতিরিক্ত ওজনের ফলে শরীরে নানা রকম রোগ আক্রমণ
করে। তাই আমাদের উচিত ওজন নিয়ন্ত্রণ করা। সকালে খালি পেটে যে
খাবারগুলো খেলে ওজন বাড়ে এই প্রশ্নের উত্তরের পাশাপাশি আজকে আমরা আরোও
জানবো অতিরিক্ত ওজন খারাপ কিনা?
অতিরিক্ত ওজন আমাদের শরীরে চর্বি ও ফ্যাট জমা করে। যার ফলে বিভিন্ন রকমের
রোগ বালাই আমাদের দেহে বাসা বাঁধে।রোগ গুলো
হল; ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগ, লিভারের
সমস্যা, কিডনির সমস্যা, হাই প্রেসার, স্ট্রোক ইত্যাদি ছাড়াও
আরো অন্যান্য রোগ সৃষ্টি হয়।
উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণ হলো ওজন বৃদ্ধি। অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমাদের
শরীরের ধমনীতে চর্বি জমা করে। যা নানা রকম রোগের সৃষ্টি করে। বেশি
ওজনের ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। এছাড়া যৌন ক্ষমতা ও
যৌন আকাঙ্ক্ষা কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত ধরনের ফলে আমাদের শরীরের
সংবেদনশীল অঙ্গে ব্যথার সৃষ্টি হয়।
অতিরিক্ত ওজন স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ওজন হলে আপনাকে মাঝেমধ্যেই নানা কটুক্তির শিকার হতে হবে। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজন আপনাকে নিয়ে নানা রকম বিদ্রুপ প্রকাশ করবে। ওজন বেশি থাকলে শরীরের মাংস বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। কোন কাজ করতে গেলেই হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়।
এছাড়াও ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে হাঁটা চলাতে অনেক কষ্ট হয়। শরীরের মধ্যে
অস্থিরতা কাজ করে। যে কোন কাজের প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। তাহলে
বুঝতেই পারছেন অতিরিক্ত জন আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। তাই আমাদের
উচিত সুষম স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া। তাহলে আমরা সুস্থভাবে বাঁচতে
পারব।
ব্যায়াম করে ওজন বাড়ানোর উপায়
সুস্থভাবে বাঁচার জন্য অবশ্যই সুষম স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। কেননা ওজন
কম থাকলে শরীর দুর্বল ও অসুস্থ থাকে।অন্যদিকে ওজন বেশি থাকলে
হাঁটাচলার সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগ বালাই শরীরে বাসা বাঁধে। শরীরকে ফিট ও
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ব্যায়াম করা যেতে পারে। আমরা ইতোমধ্যে ওজন
বাড়ানোর নানারকম উপায় জেনেছি। এখন জানব ব্যায়াম করে ওজন বাড়ানোর উপায়
সম্পর্কে।
ব্যায়াম করে ওজন বাড়ানো যায়। তবে এই ব্যায়াম অনেক বেশি কঠিন
নয়। অর্থাৎ এই ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে কোন জিমে যাওয়ার প্রয়োজন
পড়বে না। বাসায় থেকেই এ ব্যায়ামগুলো করতে পারবেন। ব্যায়াম
গুলো হল; পুশ আপ, স্কাউট, প্লাঙ্ক ইত্যাদি। আপনাদের অনেকের
মনের প্রশ্ন আসতে পারে ব্যায়াম করলে কি ওজন বাড়বে?
আমরা তো সবাই জানি যে, ওজন কমানোর জন্য আমরা ব্যায়াম করে থাকি। কিন্তু
ব্যায়াম করার মাধ্যমে ওজন বাড়ানো যায়।আসলে এই ব্যায়ামগুলো করলে শরীরের
হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে ক্ষুধা লাগে এবং খাবার খাই। তাই
ব্যায়াম করলে ওজন বাড়ে। প্রিয় পাঠক বন্ধু তাহলে বুঝতেই পেরেছেন কেন
ব্যায়াম করলে ওজন বাড়ে।
ফলমূল খেলে কি ওজন বাড়ে?
আমরা পূর্বেই জেনেছি কোন কোন খাবার খেলে দ্রুত ওজন বাড়ে। এছাড়াও সকালে
খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে? এই প্রশ্নের উত্তর আমি অনেক সুন্দর ভাবে
আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি। এখন আমি আপনাদের আরো একটি প্রশ্ন নিয়ে হাজির
হয়েছি। ফলমূল খেলে কি ওজন বাড়ে? চলুন এই প্রশ্নটিরও উত্তর নিয়ে
আলোচনা করা যাক।
কিছু ফল খেলে ওজন বৃদ্ধি পায় যেমন; কলা, এভোগ্রেডো, মিষ্টি
জাতীয় ফল ইত্যাদি। এই ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও শর্করা
থাকায় আমাদের শরীরের ফ্যাট বৃদ্ধি করে। এ ধরনের ফল অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ
করলে ওজন বৃদ্ধি পায়। চলুন এই ফলগুলো খাওয়ার নিয়ম জেনে নেয়া যাক।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুইটি করে পাকা কলা খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও
সকালে চার থেকে পাঁচটি খেজুর খেলে ওজন বাড়ে। মিষ্টি পেঁপে বেশি
পরিমাণে খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। কারণ মিষ্টি পেঁপেতে থাকে
গ্লুকোজ। যা ওজন বাড়াতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। লিচুতে প্রচুর পরিমাণে
সুগার থাকার কারণে দেহের ওজন বৃদ্ধি করে।
আবার আঙ্গুর ফল খাওয়ার মাধ্যমেও দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়। প্রতি ১০০ গ্রাম
আঙ্গুরে ৬৭ ক্যালরি খাদ্য থাকে। তবে
আপেল, পেয়ারা, লেবু ও বেরি ইত্যাদি ফলগুলো খেলে ওজন বাড়বে
না। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এই ফলগুলো খেতে পারেন। বন্ধুরা
তাহলে বুঝতে পেরেছেন ফলমূল খেলে ওজন কতটা বৃদ্ধি পায়।
ওজন বৃদ্ধির জন্য যেগুলো খাওয়া উচিত নয়
যাদের ওজন অনেক কম তারা বিভিন্ন রকমের খাবার খেয়ে দেহের ওজন বৃদ্ধি
করেন। কিন্তু সব ধরনের খাবার খেয়েই শরীরের ওজন বৃদ্ধি করা যাবে না। এর
আগে আমি বলেছিলাম, জাঙ্ক ফুড খেয়ে শরীরের ওজন বাড়ানো মোটেও ঠিক কাজ
নয়। কারণ এতে তো আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু কোন প্রকার
পুষ্টি উপাদান না থাকায় শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে।
জাঙ্ক ফুড ছাড়াও আরো কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে ওজন বৃদ্ধি পায় কিন্তু কোন
পুষ্টি উপাদান নেই। এর আগে সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে? এই
প্রশ্নের উত্তর ছাড়াও এই সম্পর্কিত সকল সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর আপনাদের সামনে
ব্যাখ্যা করেছি। এখন এই অংশে আমি আপনাদেরকে জানাবো ওজন বৃদ্ধির
জন্য যেগুলো খাওয়া উচিত নয় এই সম্পর্কে।
সাগু দানা খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়। এই খাবারে পুরোটাই শর্করা। এতে
খুবই কম পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা খেলে আপনি তো মোটা হবেনি কিন্তু
কোন পুষ্টি উপাদান পাবেন না। চিনি যুক্ত কাস্টার্ড পুডিং শরীরের ওজন
বৃদ্ধি করে।কিন্তু এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও চর্বি। যা
স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
লেখকের মন্তব্য জেনে নিন
উপরের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে করে থাকেন তাহলে আপনি সকালে
খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে এটা ছাড়াও এই সম্পর্কিত নানা প্রশ্নের উত্তরও
পেয়ে গেছেন। তাই নতুন করে আপনাদের আর আমার কোন কিছু জানানোর নেই।
তবে লেখক হিসেবে আমার মন্তব্য থাকবে, সকালে খালি পেটে উল্লেখিত ১০ টি খাবার
খেলে আপনার দ্রুত ওজন বাড়বে।তবে নিয়ম মেনে খেতে হবে। রোগা
পাতলা শরীর যেমন ভালো না তেমনি বেশি ওজন যুক্ত শরীরও ভালো না। তাই
চেষ্টা করতে হবে, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে সুষম স্বাস্থ্য বজায়
রাখার।
উপরের আলোচ্য আর্টিকেলটিতে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাকে
ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি আপনাদের মনে হয় যে কোন কিছু ভুল হয়েছে বা কোন
কিছু বাদ পড়েছে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে তা জানাবেন। এতে করে আমি পরবর্তী
আর্টিকেলগুলো আরো নির্ভুলভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা
করব। সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ!
gotechbd এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url