গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় কিসমিস কেন খাবেন?
গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান ? হ্যাঁ, আপনি সঠিক
জায়গায় ক্লিক করেছেন। কিসমিসে অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকায়
গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে । তাই উক্ত বিষয় সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।
ফিচার ইমেজ ০১
খাবারের স্বাদ ও সৌন্দর্য বাড়াতে কিসমিস ব্যবহার করা হয় । আজকে শুধু আমরা গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব না । কিসমিস কি ? কিসমিস কেন খাবেন ? কিভাবে খেতে হয়? আরো নানারকম দিক সম্পর্কে জানব । চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা -জানুন বিস্তারিত
- গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা -জানুন বিস্তারিত
- গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা জেনে নিন
- কিসমিস কি ? কিভাবে তৈরি হয় ?
- কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন
- গর্ভাবস্থায় কিসমিস কেন খাবেন জানুন
- সকালে খালি পেটে শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
- কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
- প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত জেনে নিন
- কিসমিস খেলে কি মোটা হওয়া যায় জেনে নিন
- লেখকের মন্তব্য সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা -জানুন বিস্তারিত
কিসমিস অনেক পুষ্টিকর খাবার । এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন । তাইতো
বিশেষজ্ঞরা গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার নানা উপকারিতার কথা বলেছেন।
কিসমিস হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ।এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা
পায়খানা নিশ্চিত করে । গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীর অনেক বেশি দুর্বল থাকে । এই
সময় কিসমিসে থাকা গ্লুকোজ শক্তি যোগায় ।
কিসমিসে গ্লুকোজ থাকায় গর্ভাবস্থায় শরীরের ক্রান্তি দূর করে । কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম থাকার কারণে এটি হার ও দাঁত রক্ষার সহায়তা করে ।কিসমিসে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মহিলাদের বমি বমি ভাব দূর করতে সহায়তা করে । কলাতে থাকা আইরন ও ভিটামিনের কারণে গর্ভবতী মহিলাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ।
গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা জেনে নিন
কিসমিস মিষ্টি জাতীয় খাবার হওয়ায় এতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে।তাই কিসমিস পরিমাণে বেশি খেলে গর্ভবতী মহিলার ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায় ।এছাড়াও তার অনাগত সন্তানের ও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকায় এটি ওজন বৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে ।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় জেনে নিন
কিসমত যেহেতু আঙ্গুর ফল থেকে বানানো হয় । আঙ্গুর ফল কাঁচা থাকা অবস্থায়
নানা রকম বিষক্রিয়াযুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হয় । যা রোদে শুকানোর ফলেও
এর প্রতিক্রিয়া থেকেই যায় তাই বলা যায় গর্ভাবস্থায় কিসমিস খেলে তা
অবশ্যই বিবেচনা করে খাওয়া দরকার ।
কিসমিস কি ? কিভাবে তৈরি হয় ?
কিসমিস হল শুকনো আঙ্গুর । যা আঙ্গুর ফল রোদে শুকানোর পর তৈরি হয় । কিসমিস হল শুকনো ফল যা সরাসরি খাওয়া যায় । তাই কিসমিস কে ড্রাই ফুডস বলা হয় । এটি একটি মিষ্টি জাতীয় ফল এবং মিষ্টি খাবারের সাথে পরিবেশন করা যায়। কিশমিশ মিষ্টি স্বাদের হওয়ায় এটা অনেক বড় শক্তির উৎস । কিসমিস নানা রকম ভিটামিন ও পুষ্টিগুনে ঠাসা ।
ফিচার ইমেজ ০২
কিসমিস তৈরি করার জন্য প্রথমে অনেকগুলো কাটা কিসমিস নেওয়া হয়। এরপর এগুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয় । তারপর রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। শুকিয়ে যখন চিমটি লেগে যায় এটাকে আমরা কিসমিস বলে চিনি । কিসমিস সাধারণত দুই রকমের হয়ে থাকে; কালো কিসমিস ও সাদা কিসমিস । পুষ্টিমানের দিক থেকে দুটো কিসমিসই এগিয়ে ।
কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় কিসমিস কেন খাবেন জানুন
কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান । তাই গর্ভাবস্থায় আপনার খাবার
তালিকায় কিসমিসকে রাখতে যেন ভুলবেন না । গর্ভকালীন সময়ে মায়ের অনেক বেশি
পুষ্টির প্রয়োজন হয় । এই পুষ্টিকে যোগান দেওয়ার জন্য বাইরে থেকে নানারকম
ফল মূল গর্ভবতী মহিলারা খেয়ে থাকেন । তবে একটা দিক খেয়াল রাখতে হবে যেন
কিসমিস মাত্রা অতিরিক্ত খেয়ে না ফেলেন । এতে গর্ভবতী মা ও সন্তান উভয়ই
স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে ।
কিসমিসের পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি,ভিটামিন বি৬,
কপার , আয়রন, ফাইবার ইত্যাদি । এতগুলো পুষ্টি উপাদান থাকায় কিসমিসকে সুপার
ফুড বলা হয় । তাছাড়া কিসমিস খাওয়ায় সন্তানের হাড় মজবুত থাকে, মস্তিষ্ক
সুগঠিত হয় , পাচন তন্ত্রের উন্নতি করে ও ত্বক সুস্থ রাখে ।
আরও পড়ুনঃ শরীরে এমনিওটিক ফ্লুইড কত থাকা স্বাভাবিক জেনে নিন
সকালে খালি পেটে শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
কিসমিস যেহেতু শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে । তাই সকালে খালি পেটে শুকনো কিসমিস
খেলে অনেক উপকার মিলে । শুকনো কিসমিসে রয়েছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট ,আয়রন
,পটাশিয়াম, কপার ,ভিটামিন বি ,ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি ইত্যাদি
। সকালে খালি পেটে শুকনো কিসমিস খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় এবং
শরীরের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পায় ।
শুকনো কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী । খালি পেটে শুকনো কিসমিস খেলে
শরীর দুর্বল হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং শরীরের এনার্জি বুস্ট করে
। এছাড়াও মেধা শক্তি বৃদ্ধি করে, শরীরের শর্করার চাহিদা পূরণ করে
। তাই আমরা আমাদের খাবার রুটিনে, সকালে খালি পেটে শুকনো কিসমিস খাওয়ার
চেষ্টা করব ।
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকায় । এটি আমরা পানিতে ভিজে খেতে পারি । বিশেষজ্ঞদের মতে শুকনো কিসমিসের চেয়ে ভিজিয়ে রাখা কিসমিসে বেশি আয়রন থাকে । রাতে ৪০ গ্রাম শুকনো কিসমিস এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন । তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে ভিজিয়ে রাখা পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ হতে হবে ।
ফিচার ইমেজ ০৩
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে । ভিজিয়ে রাখা কিসমিস ও পানি খেয়ে নিতে হবে
। এখানে সতর্কতার বিষয় হলো ভিজিয়ে রাখা কিসমিস খাওয়ার আধা ঘন্টার মধ্যে
কোন প্রকার খাবার খাওয়া চলবে না ।আবার আপনারা চাইলে এটি গরম পানিতেও ভিজিয়ে
খেতে পারেন । এক্ষেত্রে সুবিধা হল গরম পানিতে ভেজানো কিসমিস অনেক দ্রুত হজম
হয় । অর্থাৎ যাদের হজমের সমস্যা আছে তারা চাইলে এই পদ্ধতি অবলম্বন
করতে পারেন ।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত জেনে নিন
কিসমিস কি আপনারা বিভিন্নভাবে খেতে পারেন । যেহেতু কিসমিস সেমাই লাচ্ছি
পায়েশ ও পোলাও ব্যবহার করা হয়। তাই এটি খুব সহজেই আমাদের খাবার রুটিনে থেকে
যায় । তবে প্রতিদিন ৫- ১০টি ভেজানো কিসমিস খেতে পারেন আবার চাইলে
দুধের সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন এতে পুষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে
।
আরও পড়ুনঃ আমার নাম আকাশ
কিসমিস গরম পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া যায় এতে শরীরের টক্সিন দূর হয় । এছাড়া
ওট মিল, সালাদ ও দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন
। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ গ্রামের বেশি কিসমিস খাওয়া
উচিত নয় । চেষ্টা করবেন প্রতিদিন ৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়ার ।
কিসমিস খেলে কি মোটা হওয়া যায় জেনে নিন
কিসমিসে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে । তাই এটি খেলে আপনার ওজন
বাড়বে । প্রতি 100 গ্রাম কিসমিসে ২১৮ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায় । তাই
বলে আপনি যদি ভেবে থাকেন যে কিসমিস খেয়ে আপনার ওজন বৃদ্ধি করবেন । তাহলে
আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে । কেননা কিসমিস মিষ্টি জাতীয় ফল
হওয়ায় এতে সুগারের পরিমাণ বেশি । যার কারণে আপনার ডায়াবেটিসের মত সমস্যা হতে
পারে ।
তাই আপনার উদ্দেশ্য যদি ওজন বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে তাহলে আপনি শুধু কিসমিসই নয় এর
পাশাপাশি অন্য আরো ফলমূল খাবার তালিকা রাখতে হবে । আবার অন্যদিকে
কিসমিস অনেক ব্যয়বহুল ও বটে ।তার উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় কিসমিস খেলে
মোটা হওয়া যায় না । যদিও সামান্য ওজন বৃদ্ধি হবে ।
লেখকের মন্তব্য সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
উপরে গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ছাড়াও আরো নানান বিষয় নিয়ে বিশদ
আলোচনা করেছি । আপনারা যদি প্রদত্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন
তাহলে আশা পড়ছি এই বিষয়ে আপনি সবকিছু জেনে গেছেন ।
তাই আমি আর নতুন করে কিছু বলে এই আর্টিকেলটি দীর্ঘ করতে চাই না । যেহেতু কিসমিস
একটি পুষ্টিকর শুকনো ফল । তাই আপনাদের কাছে আমার উপদেশ থাকবে, যারা
গর্ভবতী মহিলা আছেন তারা কিসমিস খাওয়ার আগে অবশ্যই এর নিয়ম কানুন ও পরিমাণ
ভালোভাবে জেনে তারপর খাবেন ।
সম্মানিত পাঠকমন্ডলী উপরের আলোচ্য বিষয়বস্তুগুলোতে যদি আপনার আমার কোন ভুলত্রুটি
হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । আর যে বিষয়টি আপনাদের কাছে মনে
হয় সে দৃষ্টিকটু বা ভুল তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনাদের মতামত জানাবেন । এতে করে
আমি পরবর্তী আর্টিকেলে এরকম ভুল থেকে বিরত থাকবো । সুস্থ থাকবেন ,ভালো থাকবেন
।
gotechbd এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url